কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন

সম্প্রতি ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলেছেন? চ্যানেল থেকে ইনকাম করতে চাচ্ছেন কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন। তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেল পড়ছেন। 
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন

“অনলাইন ইনকাম” এর আজকের পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন, ইউনিক ভিডিও তৈরি করার নিয়ম, ভিডিও এডিট করার জন্য উল্লেখযোগ্য সফটওয়্যার সহ আরো বেশ কিছু তথ্য সম্পর্কে। সবগুলো বিষয়ে জানতে এই লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। .

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন

জনপ্রিয় সোসিয়াল প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব এখন আর শুধু বিনোদন কেন্দ্রই নয় প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি এখান থেকে আমরা ইনকাম করার চিন্তাও করে থাকি। তবে ইউটিউব থেকে ইনকাম এর মূল হাতিয়ার হল ভিডিও। যারা সম্প্রতি ইউটিউব কে ইনকাম সোর্স হিসেবে নিতে চাচ্ছেন তারা অনেকেই জানেন না কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন। 

শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি ভিডিও সম্পর্কিত আরো অনেক তথ্যই রয়েছে যেগুলো জানা খুব জরুরী। তো এবার চলুন জেনে নেই বিষয়গুলো। বোঝার সুবিধার্থে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে  উল্লেখ করছি।

ধাপ ১
গুগল ক্রোম ব্রাউজারে আপনার জিমেইল একাউন্ট দিয়ে লগইন করা থাকলে ইউটিউবে প্রবেশ করুন। এরপর উপরে ডানদিকে প্রোফাইল আইকনের বামে Create অপশনে ক্লিক করুন। তারপর পাঁচটি অপশন দেখতে পাবেন এবং সবার উপরে Upload videos এ ক্লিক করুন। 

তবে এখানে আরেকটু কথা বলে রাখি, এই পেজে Banner image, Picture, Name, Handle, Description, Links, Contact info - এ অংশগুলোর প্রত্যেকটিতে সঠিক তথ্য দিয়ে অবশ্যই পূরণ করতে হবে। আপনি যদি চান আপনার ভিডিওতে আপনার চ্যানেলের লোগো সেট করবেন তাহলে এই পেজের সব নিচে Video watermark অংশটিতে লোগো আপলোড করে দিতে পারেন।
ধাপ ২
Upload videos এ ক্লিক করার পরে আরেকটি পেজ আসবে যেখানে Select files এ ক্লিক করে আপনার ডিভাইসে থাকা ভিডিওটি অর্থাৎ যেটি আপলোড করতে যাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে।

ধাপ ৩
ফাইল সিলেক্ট করা হলে পরবর্তী একটি পেজ আসবে যেখানে মোট চারটি পার্ট রয়েছে।

Details
প্রথমে আপনি যে ভিডিও আপলোড করছেন সেটির একটি সুন্দর টাইটেল দিতে হবে। তবে এই টাইটেল নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই SEO করতে হবে যাতে সার্চ করলে সহজে আপনার ভিডিওটি আসে। এরপর আপনার ভিডিওর সম্পর্কে একটি অল্প কথায় সুন্দর ডেসক্রিপশন লিখতে হবে। তারপরে অতি জরুরী যেটি ভিডিওর থাম্বনেল। 

একটি ভিডিওর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ থাম্বনেল (Thumbnail), এটি যত আকর্ষণীয় হবে দর্শক আপনার ভিডিওটা দেখতে ততই আকৃষ্ট হবে। ভিডিও সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়ে থাকে থাম্বনেল। তারপরে যদি কোন প্লে লিস্টে ভিডিওটি রাখতে চান তবে নতুন প্লে লিস্ট করতে পারেন আর আগে থেকে করা থাকলে তার সাথে যুক্ত করতে পারেন। ভিডিওটি বাচ্চাদের জন্য তৈরি কিনা সেটি সিলেক্ট করবেন। এরপর একদম নিচে ডান পাশে Next বাটনে ক্লিক করুন।

Video elements
এই সেকশনে একজন এন্ট্রি লেবেলের ইউটিউবার হিসেবে আপনার কাজে লাগানোর মত অংশ রয়েছে Add an end screen। এই টপিকের সাথে সম্পর্কিত আরো ভিডিও থাকলে সেটা প্রমোট করতে পারেন এই ভিডিওর শেষের অংশে প্রচারের মাধ্যমে। এরপর একদম নিচে ডান পাশে Next বাটনে ক্লিক করুন।

Checks
এই সেকশনে জানা যাবে আপনি যে ভিডিওটি আপলোড করতে যাচ্ছেন সেটিতে কোন কপিরাইট স্ট্রাইক আছে কি নেই। আপনার ভিডিওটি যদি সম্পূর্ণ সঠিক থাকে তাহলে ফলাফল হিসেবে দেখাবে No issues found. এরপর একদম নিচে ডান পাশে Next বাটনে ক্লিক করুন।

Visibility
এই সেকশনে মূলত আপলোড করা ভিডিওটি কখন পাবলিশ করতে যাচ্ছেন এবং কারা দেখতে পাবে সেই বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সবাই যেন দেখতে পায় এজন্য অবশ্যই Public সিলেক্ট করবেন। সাথে সাথে যদি ভিডিওটি পাবলিশ করতে না চান তবে Schedule ব্যবহার করে সময় এবং তারিখ নির্বাচন করে দিতে হবে, পরবর্তীতে সেই সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওটি পাবলিশ হবে। এরপর একদম নিচে ডান পাশে Publish বাটনে ক্লিক করুন। ব্যাস, আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড কার্যক্রম সম্পন্ন হল।

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন

ফোন থেকে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করবেন যেভাবে

কম্পিউটার থেকে ভিডিও আপলোড (যেটি উপরে আলোচনা করা হলো) এর মতোই একই পদ্ধতিতে ফোন থেকেও ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করা যায়। তবে মোবাইল থেকে ভিডিও আপলোড করার ক্ষেত্রে শুরুতেই YouTube Studio অ্যাপটি Google Play Store থেকে ডাউনলোড করলে আপলোড এর ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হয়।

ইউটিউব ভিডিও তৈরির নিয়ম

ইউটিউবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার প্রধান উদ্দেশ্যই যখন ভিডিও মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা তাহলে সেই ভিডিওকে করতে হবে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আকর্ষণীয় এবং তথ্যসমৃদ্ধ। আর একটি চমৎকার এবং আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে আপনার তৈরি করা ভিডিওটি দর্শককে আকৃষ্ট করতে পারবে না।
    • ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার সময় অবশ্যই আপনি একটি বিষয়বস্তু বা নিস কে কেন্দ্র করে চ্যানেল তৈরি করেছেন।
    • টপিক অনুযায়ী একটি সুন্দর এবং সহজ কিওয়ার্ড বাছাই করা।
    • সেই কিওয়ার্ড এর আলোকে সহজ ভাষায় স্ক্রিপ্ট লিখে ফেলা। স্ক্রিপ্ট থাকলে সেই অনুযায়ী আপনি ভিডিওতে সাবলীল ভাবে কথা বলতে পারবেন আর স্ক্রিপ্ট না থাকলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে এডিট করতে হবে।
    • এরপরে সঠিক আলোর ব্যবস্থা করে মাইক সংযুক্ত করে জড়তা কাটিয়ে সুন্দর সাবলীল ভাবে ভিডিও ধারণ করতে হবে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী।
    • এরপর ভিডিওটি কে পর্যাপ্ত এডিট করতে হবে সফটওয়্যার এর মাধ্যমে। খেয়াল রাখবেন যতটা সম্ভব আকর্ষণীয় করে তুলবেন এক্ষেত্রে বিভিন্ন অ্যানিমেশন যোগ করতে পারেন।
    • এরপর নিয়মমাফিক প্রস্তুতকৃত ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করবেন।

ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন

স্টুডিও
আপনার চ্যানেলের ভিডিও টপিক যদি বাইরে হয় অর্থাৎ পশুপাখি গাছপালা বা বিভিন্ন দৃশ্য নিয়ে ভিডিওগ্রাফি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার কোন রুম বা স্টুডিওর প্রয়োজন নেই। তবে অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে আপনার এমন একটি রুম বা স্টুডিও প্রয়োজন সেটি বাইরে থেকে কোলাহল বা শব্দ মুক্ত থাকবে। যদিও সাউন্ড প্রুফ সিস্টেম ব্যবস্থা করা যায় তবে সেটার জন্য অর্থের প্রয়োজন এবং আপনার ইউটিউব এর একদম প্রাথমিক পর্যায়ে এত খরচ করার প্রয়োজন নেই।

ক্যামেরা
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও করার অন্যতম জরুরি উপাদান হলো একটি ক্যামেরা। প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক টাকা খরচ করে ভালো ক্যামেরা না কিনলেও চলবে। আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে কিছু ট্রিক্স অবলম্বন করে ভালো ভিডিও পেতে পারেন।

আলো
ভিডিও আকর্ষণীয় করতে আলোর অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আপনার রুমে বা স্টুডিওতে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থাকলে সেটা কাজে লাগাতে পারেন। আর না হলে বাজারে ভিডিও করার জন্য বিভিন্ন লাইট পাওয়া যায় সেগুলো কিনে নিতে পারেন।

মাইক
একটি সুন্দর আকর্ষণীয় ভিডিওর ক্ষেত্রে সাউন্ড সিস্টেম তথা শব্দ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজারে বিভিন্ন দামের বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন কোয়ালিটির ব্লুটুথ মাইক পাওয়া যায়।

ল্যাপটপ বা কম্পিউটার
ধারণকৃত ভিডিও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই এডিট করতে হবে। আজকাল অনেক অ্যাপ রয়েছে মোবাইলে এডিট করার জন্য তবে সেগুলোতে কিছু ঘাটতি থাকে তাই ভিডিও এডিটিং এর সঠিক ফলাফল পেতে অবশ্যই ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করুন।
সফটওয়্যার
ভিডিও এডিট করার জন্য পেইড এবং ফ্রি উভয় প্রকারের বিভিন্ন সফটওয়্যার পাওয়া যায়। এছাড়াও সরাসরি ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিট করা যায়। ফ্রি সফটওয়্যার এর মধ্যে CapCut অন্যতম।

ইন্টারনেট সংযোগ
ভিডিও এডিট করে আপলোড করার জন্য একদম প্রস্তুত এখন ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করার জন্য প্রয়োজন আপনার ইন্টারনেট কানেকশন। চেষ্টা করবেন ভালো গতির একটি ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করতে।

ভালো ইনকামের জন্য ইউনিক ভিডিও তৈরি করুন

উদ্দেশ্য যখন টাকা ইনকাম তখন অবশ্যই আপনার তৈরি করা ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও হতে হবে উৎকৃষ্ট মানের। ভিডিও কোয়ালিটি, ক্যামেরা রেকর্ডিং, সাউন্ড সিস্টেম, ভিডিওতে যথেষ্ট তথ্য- এই বিষয়গুলো পারফেক্ট হলে দর্শকদের কাছে আপনার ভিডিও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এছাড়াও ভিডিওতে থাকবে দক্ষ এডিটিং। 

এডিটিং এর লেভেল যত উন্নতমানের হবে ভিডিও দেখে দর্শক ততটাই স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে। এই ক্ষেত্রে আপনার পরিচিত ভিডিও এডিটিং এ দক্ষ কেউ থাকলে তাকে দিয়ে করাতে পারেন অথবা নিজেই ভিডিও এডিটিং এর বিভিন্ন কোর্স আছে সেগুলো থেকে শিখে নিতে পারেন। 
একটা কথা সব সময় মাথায় রেখে ভিডিও আপলোড করবেন, আপনার ভিডিওর মান যত ভালো হবে ভিউয়ার্স এবং সাবস্ক্রাইবার এর সংখ্যা ততই বাড়বে আর এই সংখ্যা যত বাড়বে আপনার ইনকামও তত বৃদ্ধি পাবে।

ভিডিও Edit করার জন্য উল্লেখযোগ্য সফটওয়্যার

ভিডিও চমৎকার এবং আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য অনলাইনে পেইড এবং বিনামূল্যে বিভিন্ন সফটওয়্যার পাওয়া যায়। এসব সফটওয়্যার এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সফটওয়্যার হল-
    • KineMaster
    • Filmora
    • Adobe Premiere Pro
    • Pinnacle Studio
    • Camtasia
    • CapCut

ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার সঠিক সময়

একদম নতুন ইউটিউবারদের জন্য এটি খুবই সাধারণ একটি প্রশ্ন যে দিনের কোন সময় ভিডিও আপলোড করলে ভিউজ বেশি পাওয়া যাবে। এটা মূলত ডিপেন্ড করে জায়গা বা স্থানের উপর এক এক দেশের এক এক সময়ে ভিডিও আপলোড করলে ভিউজ বেশি আসবে। আর এটা জানার জন্য আমাদের অবশ্য ফলো করা উচিত ইউটিউব এনালাইসিস। 

একদম শুরুর দিকে কয়েকটি ভিডিও আপলোড এর পরে প্রত্যেকদিন নিয়মিতভাবে YouTube Analysis ফলো করলে বোঝা যাবে কোন সময় কোন ভিডিওটি বেশি ভিউজ পেয়েছে। এছাড়াও সাধারণভাবে চিন্তা করলে বোঝা যাবে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অফিস টাইম হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা। 
সকালের দিকে সকল দর্শকই স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালতের জন্য ব্যস্ত থাকে এবং বিকাল চারটার পরে সাধারণত সব কিছুই শেষ হতে শুরু করে। তাই সাধারণভাবে ধরে নেওয়া যায় বিকালে বা সন্ধ্যায় ভিডিও পোস্ট করলে সেই ভিডিও গুলোর ভিউ বেশি পাওয়া সম্ভব।

কি ধরনের ভিডিও আপলোড করা উচিত

ইউটিউব চ্যানেল যখন তৈরি করেছেন তখনই একটা নির্দিষ্ট বিষয়কে ভিত্তি করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছিলেন। যেটাকে প্রযুক্তির ভাষায় বলা হয় “নিশ”(Niche)। তাই আপনার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও আপনার ইউটিউব চ্যানেলে একসাথে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। কেন পারবেন না? একটু বুঝিয়ে বলি। 

ধরুন ইউটিউবে রান্না বিষয়ক একটি জনপ্রিয় চ্যানেল রয়েছে যার নাম “কুকিং এক্সপার্ট”। যখন আপনার রান্না বিষয়ক কোন ভিডিও অর্থাৎ রেসিপি সম্পর্কিত ভিডিও দেখতে ইচ্ছা করবে অথবা নির্দিষ্ট কোন রেসিপি যখন জানতে চাইবেন তখন আপনি ইউটিউবে প্রবেশ করে কিন্তু “কুকিং এক্সপার্ট” চ্যানেলটিতে ঢুকবেন অথবা আপনি মনে মনে চাইবেন কুকিং এক্সপার্ট চ্যানেল থেকে যেন কোন ভিডিও আপনি দেখতে পান। 

কারণ আপনি জানেন এই চ্যানেলটি শুধুমাত্র রান্না বিষয়ক ভিডিও পাবলিশ করে। তাই আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপনি নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়া যখন সব রকমের ভিডিও আপলোড করবেন তখন আপনার চ্যানেলের গুরুত্ব যেমন কমে যাবে ঠিক তেমনি মানুষ আপনার চ্যানেল সহজে মনেও রাখবে না। 

দর্শকরা যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সার্চ দেয় অথবা যে বিষয়ের উপর ভিডিও দেখতে পছন্দ করে সেগুলো থেকে একটি বাছাই করে আপনাকে সেই বিষয়ের উপরে ভিডিও আপলোড করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে মনে রাখতে হবে, একটি বিষয় জনপ্রিয় হওয়া সত্বেও সে বিষয়ে যদি আপনার ধারণা না থাকে তবে আপনি আপনার দর্শকদের বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারবেন না। 

সে ক্ষেত্রে আপনি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাবেন না। সুতরাং যে বিষয়ে ভিডিও তৈরি করে ইনকাম করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান আপনার অবশ্যই থাকতে হবে। জনপ্রিয় কিছু টপিকের উপর ভিডিও করলে ভালো ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার পাওয়া সম্ভব যদিও এই টপিক গুলো ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার সময় প্রয়োজন তারপরও এখন আরেকবার জানিয়ে দিচ্ছি।
    • Health Tips
    • Mobile Review
    • Online Income
    • Political Views
    • Game Review
    • Tutorial
    • App/Software Review
    • Handicraft
    • Education
    • Motivational
    • Religious
    • Information Based
    • Technology
    • Lifestyle
    • Funny Video

ইউটিউবের নতুন নিয়ম অনুযায়ী যে ধরনের কনটেন্ট তৈরি করা যাবে না

ইউটিউব থেকে আয় বলতে মূলত আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় কে বোঝানো হয়। আয়ের ব্যাপারটি যেহেতু ইউটিউব এবং গুগল এডসেন্স এই দুইটির সাথে জড়িত তাই আপনার ভিডিও যদি বিজ্ঞাপন দেখানোর উপযোগী না হয় তবে YouTube কর্তৃপক্ষ এবং গুগল কর্তৃপক্ষ মাধ্যমে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে না এবং আয় হবে না। 
কোন কোন ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে না, তার বিধি-বিধানের জন্য রয়েছে ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইনস এবং google এডসেন্স পলিসি। এই গাইডলাইনস এবং পলিসি অনুসারে নিয়ম না মেনে যদি ভিডিও আপলোড করেন তাহলে আপনার মনিটাইজেশন আংশিক অথবা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন এসব গাইডলাইনস এবং পলিসির ব্যাপারে ইউটিউব এবং গুগল অত্যন্ত স্ট্রিক্ট। 

তো চলুন জেনে নিন ভিডিওতে কোন বিষয়গুলো একদমই রাখা যাবে না অর্থাৎ ইউটিউবের নীতিমালা অনুযায়ী কোন ভিডিও গুলো নিষিদ্ধ।
  1. স্প্যাম প্রতারণামূলক ভিডিও আপলোড করা যাবে না। ভিডিও স্পাম, বিভ্রান্তিকর থাম্বনেল, স্ক্যাম, প্রলোভন মূলক ভিডিও, কমেন্টের মাধ্যমে ছড়ানো স্প্যাম, একই কমেন্ট বারবার পোস্ট করা ইত্যাদি স্প্যাম বা প্রতারণামূলক ভিডিওর অন্তর্ভুক্ত।
  2. সংবেদনশীল কন্টেন্ট আপলোড করা থেকে বিরত থাকুন। নগ্নতা ও যৌনতা পূর্ণ কনটেন্ট, বাচ্চাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ভিডিও, আত্মহত্যা, নিজেকে শারীরিক কষ্ট দেওয়া সংক্রান্ত ভিডিও, অশ্লীল ভাষা ব্যবহৃত ভিডিও ইত্যাদি সংবেদনশীল কনটেন্ট এর আওতায় পড়ে।
  3. ঘৃণাত্মক বক্তব্য, আক্রমনাত্মক আচরণ, গ্রাফিক হিংস্রতা, ক্ষতিকর আক্রমণ এবং যে কনটেন্ট ক্ষতিকর বিপদজনক আচরণ প্রচার করে তা ইউটিউবে দেখানোর অনুমতি দেওয়া হয় না।
  4. অবৈধ বা নিয়ন্ত্রিত কিছু প্রোডাক্ট এবং আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা যাবে না।
  5. গুরুতর ক্ষতি হওয়ার ব্যাপক ঝুঁকি থাকা কয়েক ধরনের ভুল, বিভ্রান্তিমূলক বা প্রতারণামূলক কন্টেন্ট ইউটিউবে অনুমোদিত নয়। এর মধ্যে ক্ষতিকারক প্রতিকার বা চিকিৎসা পদ্ধতি, প্রযুক্তিগতভাবে কারচুপি করা কয়েক ধরনের কনটেন্ট বা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী কন্টেন্ট।
  6. YouTube কমিউনিটি নির্দেশিকা লঙ্ঘন করতে পারে এমন কন্টেন্টও কিছু ক্ষেত্রে ইউটিউবে থাকতে পারে যদি তা শিক্ষামূলক, তথ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি) সম্পর্কিত, বিজ্ঞানভিত্তিক ও শৈল্পিক (EDSA) প্রসঙ্গের কন্টেন্ট হয়।
  7. ইউটিউব চ্যানেল এবং ভিডিওর দর্শক বানানোর জন্য অনেক ইউটিউবার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার করে থাকেন। তবে YouTube কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি নিয়ম জারি করেছে ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও অতিমাত্রায় কোন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা যাবে না তবে মাঝেমধ্যে করা যাবে। অতিরিক্ত বা ঘন ঘন শেয়ার করলে ইউটিউব এটিকে স্প্যাম হিসেবে বিবেচনা করে মনিটাইজেশন সাময়িক বন্ধ করে দিতে পারে।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন

শেষ কথা
আজকের এই লেখাটি লেখাই হয়েছে মূলত তাদের জন্য যারা ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে চাচ্ছেন এবং ইউটিউব সম্পর্কে ধারণা খুবই সামান্য। অভিজ্ঞ ইউটিউবারদের জন্য আজকের এই লেখাটি নয়। এখানে ভিডিও আপলোড সম্পর্কিত যা কিছু জানানো হলো তা নিতান্তই বেসিক পর্যায়ের তথ্য। 
তবে ইনকাম ভালো করতে চাইলে এবং ভিডিওর মান আরও উন্নত করতে চাইলে এডভান্স লেভেলের তথ্য আপনাকে জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সেসব বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে আরেকদিন উপস্থিত হব।

যাই হোক, কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করবেন তা জানানোর চেষ্টা করলাম। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। লেখাটি থেকে সামান্যতম নতুন কিছু শিখে থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। আর ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এই ধরনের আরও তথ্যপূর্ণ লেখা পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুবিন পিডিয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url